ভোটার আইডি কার্ড চেক ২০২৪ । ভোটার আইডি কার্ড যাচাই ও ডাউনলোড করার নিয়ম

ভোটার আইডি কার্ড বা NID Card আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপুর্ণ। জন্মনিবন্ধনের পর এই কাগজটা আমাদের দেশের নাগরিকত্ব প্রমাণ করে। আপনি যদি প্রাপ্তবয়স্ক অর্থ্যাৎ ১৮ বছরের উপরে আপনার বয়স হয়ে থাকে তবে আপনার যেকোনো কাজে লাগবে এই ডকুমেন্টটি। যা না থাকলে আপনি রাষ্ট্রীয় অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। 

ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন কপি - ভোটার আইডি কার্ড চেক ২০২৪ - ভোটার আইডি কার্ড যাচাই ও ডাউনলোড করার নিয়ম - voter id card download - NeotericIT.com


ভোটার আইডি বা জাতীয় পরিচয়পত্র হলো আপনার একটি দেশে নাগরিকত্ব প্রমাণ করার দলিল। জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া একটি দেশের কাছে আপনি নাগরিক হিসেবে সুবিধা দাবি করতে পারবেন নাহ। আমরা অনেকেই ভোটার আইডি কার্ডের আবেদন করে বসে থাকি। কিন্তু যতদিন বোর্ড বা পৌরসভা থেকে না দিচ্ছে আমাদের ততদিন অপেক্ষা করতে  হয়। আমাদের হঠাৎ প্রয়োজন হলে আমরা ব্যাবহার করতে পারি না। আর কোনো কম্পিউটার দোকানে গেলে ৩০০-৪০০ টাকা নিয়ে নেয়। তাই আজকে আপনাদের জানাবো কিভাবে ভোটার আইডি কার্ড চেক এবং ডাউনলোড করবেন কোনো খরচ ছাড়াই। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম এবং ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম


ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম ২০২৪:

এই ২০২৪ সালে NID card চেক করা বা ডাউনলোড করা একেবারেই সহজ। এর জন্য আপনাকে কোনো দালাল ধরার এমনকি কোনো কম্পিউটারের দোকানে যাওয়ারও প্রয়োজন নেই। আপনার হাতে থাকা মোবাইল দিয়েই আপনি নিজে নিজেই আপনার আইডি কার্ড চেক, ডাউনলোড বা সংশোধণ করতে পারবেন। একনিমেষে ঘরে বসেই আপনি চেক করতে পারেন আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র। যারা নতুন ভোটার হয়েছেন তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার পদ্ধতি আর পুরাতনগুলো ডাউনলোড করার পদ্ধতি একই। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেওয়া যাক কিভাবে ভোটার আইডি কার্ড যাচাই করবেন। নতুন ভোটার আইডি কার্ড চেক কিংবা পুরাতন আইডি কার্ড চেক নিয়ে দুশ্চিন্তা আর নয় । 

অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন  

ফরম নম্বর দিয়ে ভোটার আইডি কার্ড চেক ২০২৪:

ফরম নাম্বার দিয়ে আইডি কার্ড বের করা খুব সহজ । চলুন দেখে আসি কিভাবে ভোটার স্লিপ দিয়ে আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

ভোটার আইডি কার্ড চেক ২০২৪ - ভোটার আইডি কার্ড যাচাই ও ডাউনলোড করার নিয়ম - voter id card download - NeotericIT.com


প্রথমেই যেকোনো ব্রাউজার থেকে চলে যান https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/card-status এই লিংক এ।

তারপর নিচের ছবির মতো পেজ আসবে:

এখানে প্রথমে আপনার কাছে থাকা নিবন্ধন স্লিপে থাকা ফরম নম্বরটা প্রদান করুন তারপর জন্মতারিখ তারপর ক্যাপচা পূরণ করুন। তারপর সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। তারপর আপনাকে আপনার আইডি কার্ডের বিস্তারিত তথ্য দেখাবে।

এসএমএস এর মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড চেক করার নিয়ম:

এসএমএস এর মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড চেক করা খুবই সহজ একটা পদ্ধতি । তাদের স্মার্ট ফোন নেই তারা এই পদ্ধতি অবলম্বন করে যারা নতুন আবেদন করেছেন খুব সহজে জাতীয় পরিচয় পত্র চেক করতে পারবেন । 
আপনার মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে লিখুন NID<space>Form No<Space>DD-MM-YYYY এবং পাঠিয়ে দিন 105 নাম্বারে।
যেমন: NID 87654321 01-02-2000
ফিরতি মেসেজে আপনাকে আপনার আইডি কার্ড এর তথ্য জানিয়ে দেয়া হবে।

ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার নিয়ম:

ভোটার আইডি বা জাতীয় পরিচয় পত্র ডাউনলোড করার জন্য যারা কম্পিউটার কিংবা অন্য একজন দালালের হাত ধরে টাকা খরচ ও ঝামেলা পোহাতে না চান তারা এই পদ্ধতি কাজে লাগাতে পারেন । 
ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য প্রথমে আপনাকে যেতে হবে https://services.nidw.gov.bd/nid-pub এই লিংক এ।
তারপর নিচের ছবির মতো এই পেজটি আসবে:
ভোটার আইডি কার্ড চেক ২০২৪ - ভোটার আইডি কার্ড যাচাই ও ডাউনলোড করার নিয়ম - voter id card download - NeotericIT.com

প্রথমেই রেজিস্টার এ ক্লিক করুন। তারপর নিচের পেজটি আসবে। 

ভোটার আইডি কার্ড চেক ২০২৪ - ভোটার আইডি কার্ড যাচাই ও ডাউনলোড করার নিয়ম - voter id card download - NeotericIT.com


  1. এখানে আপনার ফর্ম নাম্বার লিখুন
  2. তারপর জন্ম তারিখ 
  3. সবশেষে ক্যাপচা পূরণ করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন

এবার আপনাকে একটি QR কোড দেখাবে। তারপর প্রথমেই গুগল প্লে স্টোর থেকে NID Wallet অ্যাপটি ইন্সটল করতে হবে

ভোটার আইডি কার্ড চেক ২০২৪ - ভোটার আইডি কার্ড যাচাই ও ডাউনলোড করার নিয়ম - voter id card download - NeotericIT.com


অ্যাপটি ওপেন করে কোডটি স্ক্যান করতে হবে। এবার যার আইডি কার্ড যাচাই বা ডাউনলোড করা হবে তার ফেস ভেরিফিকেশন করতে হবে।
এই ধাপ শেষ করার পর আপনার আইডি কার্ড আবেদনে যে মোবাইল নাম্বার দিয়েছিলেন ঐ নাম্বারে OTP পাঠানো হবে ভেরিফিকেশন এর জন্য। কোডটি দেয়ার পর একটি পাসওয়ার্ড সেট করতে বলা হবে। পাসওয়ার্ড সেট করে নিবেন নিরাপত্তার জন্য। এবার আপনার রেজিস্ট্রেশান কাজ শেষ।

ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন কপি ডাউনলোড করার নিয়ম:

স্মার্ট হাতে পাওয়ার পুর্বে জাতীয় পরিচয় পত্রের একটা অনলাইন কপি সংগ্রহ করে জাতীয় পরিচয় সনদ হিসেবে ব্যবহার করা যায় । এর জন্য -  প্রথমেই https://services.nidw.gov.bd/nid-pub এই লিংক এ প্রবেশ করুন। স্ক্রল করে নিচের দিকে যান, এই পেজ দেখতে পাবেন।

ভোটার আইডি কার্ড চেক ২০২৪ - ভোটার আইডি কার্ড যাচাই ও ডাউনলোড করার নিয়ম - voter id card download - NeotericIT.com


এখানে আপনার তথ্যগুলো পূরণ করুন এবং ক্যাপচা পূরণ করে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন। এরপর পরবর্তী পেজে আপনি আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের সব তথ্য দেখতে পারবেন এবং ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার নিয়ম: 

জাতীয় পরিচয় পত্র হয়ে গেছে কিন্তু কোথাও আপনার ভুল সংশোধন করা প্রয়োজন । এ ক্ষেত্রে সেই কাজটা যদি অন্য একজন  ব্যাক্তির মাধ্যমে করাতে চান তাহলে আবার ও ভুল হতে পারে । তাই নিজের কাজ নিজেই করলে কোন ভুল হবে না ।  জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করার ক্ষেত্রে আপনাকে একইভাবে আপনার আইডি কার্ডের নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে ক্যাপচা পূরণ করে লগইন করতে হবে। এরপর ‘প্রোফাইল’ অপশন এ ক্লিক করে আপনি প্রয়োজনমতো এডিট করে করে ফি প্রদানপুর্বক আবেদন সম্পন্ন করুন।
আপনার আইডি কার্ড সংশোধন আবেদন অনুমোদন হলে আপনি আপনার সংশোধিত আইডি কার্ডটি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

এবার চলুন কিছু অতিপরিচিত প্রশ্নের উত্তর জেনে নেয়া যাক:

এই প্রশ্নগুলো আমরা হরহামেশাই পেয়ে থাকি। তাই আজকে আপনাদের সেসব প্রশ্নের উত্তর সংক্ষেপে দিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবো। আশা করছি আপনাদের সব কনফিউশন ক্লিয়ার করে দিতে পারবো। তো শুরু করা যাক আমাদের প্রশ্নোত্তর পর্ব!

জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করতে কি কি লাগে?

আপনি কোন ধরণের তথ্য সংশোধন করবেন তার উপর নির্ভর করে আপনাকে কাগজপত্র জমা দিতে হবে। একেক তথ্য সংশোধন এর জন্য একেক ধরণের কাগজ প্রয়োজন পড়ে।

ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করতে কি কি লাগে?

ভোটার আইডি কার্ডের নাম সংশোধনের জন্য প্রয়োজন এসএসসি সনদ, ড্রাইভিং লাইসেন্স বা পাসপোর্ট। এগুলোর না থাকলে, জন্ম নিবন্ধন, সরকারী চাকুরির সার্ভিস বইয়ের কপি, বিয়ের কাবিন ইত্যাদিও দেয়া যায়।

কিভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করা যায়?

জাতীয় পরিচয় পত্রের যে কোন ভুল সংশোধনের জন্য উপযুক্ত প্রমান আপলোড করে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। আবেদনটি কর্তৃপক্ষ অনুমোদন করলে অনলাইন থেকে এনআইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন।

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে?

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য সাধারণত নির্বাচন কমিশন থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ দিন সময় নির্ধারন করা হয়েছে। তবে অনলাইনে উপযুক্ত প্রমাণপত্র আপলোড করে সঠিকভাবে আবেদন করার পর ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে আবেদন অনুমোদন হয়ে যায়।

ভোটার আইডি কার্ড কতবার সংশোধন করা যায়?

আপনার ভুল থাকলে আপনি যতবার ইচ্ছা সংশোধনের আবেদন করতে পারবেন। তবে, এক তথ্য শুধুমাত্র একবার সংশোধন করা যাবে। প্রথমবার আবেদনে ফি ভ্যাটসহ- ২৩০ টাকা, ২য়বার ৩৪৫, ৩য় বার থেকে যে কোন বার ৪৬০ টাকা পরিশোধন করতে হবে।

ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগে?

ভোটার আইডি কার্ডের তথ্য সংশোধন করতে ভ্যাটসহ ২৩০ টাকা এবং অন্যান্য তথ্য সংশোধন করতে ১১৫ টাকা লাগে। উভয় তথ্য একসাথে সংশোন করতে মোট ফি ৩৪৫ টাকা খরচ হবে। অর্থ্যাৎ আবেদনের ধরণের উপর নির্ভর করে ফি নেয়া হয়। 

কিভাবে বিকাশে সংশোধন ফি জমা দিবো?

বিকাশের মাধ্যমে ফি দিতে বিকাশ এ্যাপ থেকে আপনার বিকাশ একাউন্টে লগইন করুন। এবং নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

  1. বিকাশের পে বিল অপশনে যান
  2. সরকারি ফি অপশনে ক্লিক করে NID Service অপশনটি সিলেক্ট করুন।
  3. আপনার আইডি কার্ডের নম্বরটি লিখুন
  4. আপনার আবেদনের ধরণ বাছাই করুন।
  5. আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন নম্বর দিয়ে ফি পরিশোধ করুন।

ফি পরিশোধ করা হলে আপনি জাতীয় পরিচয়পত্রের ওয়েবসাইটে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপলোড করে আবেদনটি সাবমিট করুন।

স্মার্ট কার্ড কিভাবে সংশোধন করা যায়?

স্মার্ট কার্ড সংশোধন করার জন্য প্রথমে services.nidw.gov.bd ওয়েবসাইটে আপনার স্মার্ট কার্ড নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন। ফেইস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করে লগইন করুন। এবার প্রোফাইল অপশন থেকে এডিট অপশনে ক্লিক করে তথ্য সংশোধন করুন। সংশোধন ফি পরিশোধ ও প্রয়োজনীয় প্রমাণপত্র আপলোড করে আবেদন সাবমিট করুন। আবেদন অনুমোদন হলে তথ্য সংশোধন হবে এবং আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে।

আশা করছি আপনাদের সবগুলো না হলেও প্রায় প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছি। এছাড়া আর কোনো প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্ট করে আমাদের জানান আমরা আপনার প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য আছি সর্বদা।


Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url