বদ নজর থেকে মুক্তির উপায় | বদ নজর থেকে মুক্তির দোয়া | বদ নজর লাগলে করণীয় - bod nojor er doa

 মানুষের উপর অনেক সময় বিভিন্ন কারণে বদনজর লেগে থাকে। শুধুমাত্র যে মানুষের দ্বারাই বদনজর লেগে থাকে তা নয় অনেক বদ জিনের কারণেও বদনজরের সমস্যাটা আসতে পারে।আমরা অনেকেই মানুষের কুদৃষ্টিকে বদনজর হিসেবে চিনে থাকি। বিশেষ করে এই সমস্যায় বেশি পড়ে থাকেন শিশুরা। অনেকেই বদনজর থেকে বাঁচার দোয়া ও বদনজরে রুকাইয়া সম্পর্কে জানতে চান। কেননা বদ নজর থেকে বাঁচতে হলে আমাদের কিছু আমল করতে হবে তাহলে কারো কুদৃষ্টি আমাদের প্রতি কাজ করবে না। বদনজর এড়াতে নিয়মিত কুরআনে আমল পড়া যেতে পারে।নিম্নে বদ নজর থেকে মুক্তির দোয়া ও বদ নজর থেকে কিভাবে মুক্তি পাবেন এই বিষয়ে মূল্যবান কিছু তথ্য দেওয়া হয়েছে। 

বদ নজর থেকে মুক্তির উপায় - বদ নজর থেকে মুক্তির দোয়া - বদ নজর লাগলে করণীয় - bod nojor er doa - NeotericIT.com


নিওটেরিক আইটির এই আর্টিকেল থেকে বদ নজর থেকে মুক্তির উপায় নিয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন । আপনার যদি কখনো এমন মনে হয় যে আপনার সাথে দিন দিন খারাপ অবস্তা হচ্ছে হঠাত করে । আপনার সাথে বদ নজরের লক্ষন গুলো আপনার মধ্যে পাওয়া যায় তাহলে আপনি নিম্নের উপায় ও সমাধান গুলো দেখতে পারেন । 

বদ নজর থেকে মুক্তির দোয়া 

নিয়মিত কুরআনী আমল করলে আল্লাহ তায়ালা বদনজর থেকে মুক্ত করবেন। বদ নজর থেকে নিজেকে দূরে রাখতে বা শিশুদেরকে দূরে রাখার জন্য সূরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি পড়া,সূরা বাকারার শেষের দুই আয়াত, সূরা ইখলাস ও সূরা ফালাক করে শিশুর শরীরে ফু দেওয়া যেতে পারে। তাহলে শিশুরা বদ নজরের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকবেন। 

বদ নজরে আক্রান্ত ব্যক্তিকে অবশ্যই ঝাড়ফুঁক দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বদনজরে আক্রান্ত ব্যক্তির যখন ঝাড়ফুঁক দেওয়া হবে তখন নিম্নের দোয়াটি পড়া যেতে পারে:-

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

বিসমিল্লাহি আরক্বিকা মিং কুল্লি শাইয়িন ইয়ুজিকা ওয়া মিন সাররি কুল্লি নাফসিন আও আইনিন হাসাদিল্লাহু ইয়াশফিকা বিসমিল্লাহি আরক্বিকা।

অর্থ: আল্লাহর নামে কষ্ট দানকারীর সমস্ত অনিষ্টতা থেকে তোমাকে ঝাড়ফুক করছি। হিংসুক ব্যক্তির কুদৃষ্টির অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর নামে তোমাকে ঝাড়ফুক করছি।আল্লাহ তোমাকে আরোগ্য দান করতে তারই নামে ঝাড়ফুক করছি। 

বদ নজর লাগলে করণীয়

বদ নজর লাগলে করনীয় কি হবে এই বিষয়ে অনেকের জানার আগ্রহ রয়েছে। বদ নজরের চিকিৎসা সাধারণত দুই ভাবে বলা রয়েছে হাদিস শরীফে। বদ নজরকারী ব্যক্তি যদি পরিচিত হয়ে থাকে তাহলে তাকে গোসল করার নির্দেশ দিতে হবে। অর্থাৎ একজন বদনজরকারী ব্যক্তির কাজ হল মহান আল্লাহতালার নাম স্মরণ করে গোসল করে ফেলা। 

তারপরে বদ নজরকারী ব্যক্তির পানি আক্রান্ত ব্যক্তির পেছন থেকে তার শরীরে ওপর ঢেলে দেওয়া বা ছিটিয়ে দেওয়া। তাহলে মহান আল্লাহতালার ইচ্ছাতে আক্রান্ত ব্যক্তি খুবই দ্রুত সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠবে। 

বদ নজর কারী ব্যক্তি যদি অপরিচিত হয়ে থাকেন তাহলে মহান আল্লাহতালার উপর ভরসা রেখে আক্রান্ত ব্যক্তিকে কোরআনের আয়াত ও নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু এর প্রমাণিত দোয়া নিয়ে ঝাড়ফুঁক করাতে হবে। এইক্ষেত্রে রোগী ও চিকিৎসককে বিশ্বাস রাখতে হবে যে, আরোগ্যদানকারী শুধু মহান আল্লাহতালা। আর কুরআন হলো আরোগ্যের একমাত্র উপকরণ।বদ নজরের চিকিৎসায় বেশ কিছু দোয়া ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যেমন:-

  • সুরা ফাতেহা 
  • আয়াতুল কুরসি 
  • সূরা ফালাক 
  • সূরা ইখলাস 
  • সূরা নাস
  • সূরা বাকারার শেষের দুই আয়াত 


ছোট বাচ্চাদের বদ নজর থেকে মুক্তির দোয়া 

ছোট বাচ্চাদের বদ নজর লাগার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। ছোট বাচ্চাদের যদি কখনো বদনজর লেগে থাকে তাহলে নিম্নের দোয়াটি পড়া যেতে পারে।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

উইজুকুমা বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিন ওয়া হাম্মাতিন ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লামমাতিন। 

অর্থ: আমি তোমাদের উভয়কে মহান আল্লাহতালার কালামের আশ্রয়ে রাখতে চাই।সব ধরনের শয়তান হতে, কষ্টদায়ক বস্তু হতে, এবং সব ধরনের বদনজর থেকে। 

বাচ্চাদের বদনজরের রুকইয়াহ করার নিয়ম। বাচ্চাদের বদনজরের রুকইয়াহ

ছোট বাচ্চাদের উপর বদ নজর লাগলে রুকইয়াহ করা যেতে পারে। বাচ্চাদের বদনজরের  রুকইয়াহ করার নিয়ম নিচে তুলে ধরা হলো:-

  1. প্রথমে বাচ্চাকে কোলে নিয়ে স্বাভাবিকভাবে বসাতে হবে।
  2. তারপরে আপনার সম্পূর্ণ মনোযোগ বাচ্চার প্রতি দিতে হবে। 
  3. তারপরে বাচ্চার মাথায় হাত রেখে কয়েকবার রুকইয়াহ দোয়া বা আয়াতগুলো পড়তে হবে এবং মাঝেমধ্যে ফু দিতে হবে। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

উ‘ইযুকুম বিকালিমা-তিল্লা-হিত্তা-ম্মাহ, মিন কুল্লি শাইত-নিন ওয়াহা-ম্মাহ, ওয়ামিন কুল্লি ‘আইনিন লা-ম্মাহ

তাছাড়া এর সাথে চাইলে সুরা ফাতিহা ও তিন কুল পড়া যায়। প্রয়োজনে পর পর কয় দিন সকাল বিকাল রুকাইয়া করা যেতে পারে। তবে সমস্যা যদি অনেক জটিল হয়ে থাকে অর্থাৎ জাদু অথবা জিনের আচরের লক্ষণ গুলো মারাত্মক আকারে প্রকাশ পেয়ে থাকে তাহলে একটু দীর্ঘ সময় রুকইয়াহ করতে হবে।এই ক্ষেত্রে সাধারণত বাচ্চার বয়স শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে কম-বেশি করা যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে সাত দিনের রুকইয়াহ করতে হতে পারে। 

বাচ্চাদের নজর লাগলে কি করতে হয়

শিশুদের বদনজর বা কুনজর লাগার ঘটনা মাঝেমধ্যেই হয়ে থাকে। শিশুদের কুনজর লাগলে তারা হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। যদি কখনো আপনার শিশু এই সমস্যায় পড়ে থাকেন তাহলে একটি লাল শুকনো লঙ্কা দিয়ে মাথার চারপাশে সাতবার ঘুরিয়ে আগুনে পুড়িয়ে নিন। শুকনো লঙ্কাটা সম্পূর্ণ পুড়ে না যাওয়া পর্যন্ত পিছনে তাকানো যাবে না। তাছাড়া বাচ্চাকে সকল সময় পবিত্র জায়গায় রাখার চেষ্টা করবেন এবং রাতের বেলা বাচ্চাকে নিয়ে কোন জায়গায় যাবেন না। এতে নজর না কাটলে বাচ্চাদের নজর কাটানোর ইসলামিক কিছু দোয়া রয়েছে এগুলোর মাধ্যমে সমস্যাটা কেটে যায়। 

কুদৃষ্টি থেকে বাঁচার উপায়। মুখদোষের দোয়া

কুদৃষ্টি বা কুনজর মানুষকে অন্যায় কাজের দিকে ধাবিত করে থাকে। অর্থাৎ এর মাধ্যমে মানুষ অনেক অপরাধ করে থাকে। রাসুল আল্লাহ সাল্লাল্লাহু সালাম বলেছেন মুমিন মুসলমানকে রাস্তার হক আদায় করে চলাফেরা করার প্রতি তাগিদ দিয়েছেন। কেননা কুদৃষ্টি বা বদনজরের কারণে মানুষের অন্তর ও চরিত্র বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকে। যা সাধারণত ধীরে ধীরে মানুষকে চরিত্রহীনতার দিকে ধাবিত করতে থাকে। কুদৃষ্টি থেকে বাঁচার উপায় নিয়ে এই পর্ব । 

বদ নজর কে বাহন করে শয়তান মানুষের মন ও মস্তিষ্কে হানা দিয়ে থাকে। বদ নজর এক সময় মানুষকে খারাপ চরিত্র থেকে শিরকের পথে নিয়ে যায়। কারো কুদৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য নিম্নে দেওয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু সালামের এই দোয়াটি পড়তে পারেন:-

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিম মুককারাতিল আখলাকী ওয়াল আ মালি ওয়াল আহওয়ায়ি।

অর্থ: হে মহান আল্লাহ। নিশ্চয়ই আমি তোমার কাছে খারাপ চরিত্র অন্যায় কাজ ও কু প্রবৃত্তির অনিষ্ঠতা থেকে আশ্রয় চাচ্ছি। 

বদ নজর ও অনিষ্ঠতা থেকে বাঁচতে নিয়মিত কুরআনী আমল করতে হবে ও আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে। তাছাড়া বদ নজর থেকে বাঁচতে নিম্নের আয়াতটি তেলাওয়াত করা যেতে পারে। 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

ওয়া ইয়্যাকাদুল্লাজিনা কাফারু লাইয়ুযলাকুনাকা বি-আবসারিহিম  লামমা সামিয়ুজ জিকরা ওয়া ইয়া কুলুনা ইন্নাহু লামাঝনুন। ওয়া মাহুয়া ইল্লাহ জিকরুল লিল আলামিন।


অর্থ:- অবিশ্বাসীরা যখন মহান আল্লাহর কিতাব শুনে তখন এমন ভাবে তাকায় যে, এখনই নিজেদের দৃষ্টি দিয়ে তোমাকে আছড়ে ঘায়েল করে দিবে। তারা এ কথাও বলে যে একজন পাগল অথচ এই কিতাব তো মানব মন্ডলীর উপদেশ ছাড়া কিছুই নয়।


কুদৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে ও খারাপ অশ্লীল নিজেদের দূরে রাখতে সকল সময় মহান আল্লাহতালার নির্দেশ অনুযায়ী কুরআনে আমল করতে হবে। তাহলে মহান আল্লাহ তা'আলা আমাদের সকল ধরনের বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করবে। 


বদ নজর বা কুদৃষ্টি একটি ইসলামী বিশ্বাস অনুযায়ী, মানুষের দৃষ্টির মাধ্যমে শরীর বা মনের ক্ষতি করা। বদ নজর থেকে মুক্তির জন্য ইসলামে কিছু নির্দেশনা রয়েছে।


বদ নজর থেকে মুক্তির কিছু উপায়


আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া: বদ নজর থেকে মুক্তির জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া। আল্লাহ বলেন,

"যারা (আল্লাহর কাছে) আশ্রয় চায়, আমি তাদের আশ্রয় দেব।"


(সূরা আ'রাফ, আয়াত: ১৫০)


দোয়া করা: বদ নজর থেকে মুক্তির জন্য কিছু নির্দিষ্ট দোয়া রয়েছে। যেমন,

"আল্লাহুম্মা হিফযিনি মিন শাররি বানি আদাম ওয়া মিন শাররি হিমসীহিম ওয়া আয়নিহিম."


অর্থ: "হে আল্লাহ! আমাকে আদম সন্তানের ক্ষতি থেকে, তাদের হিংসা থেকে এবং তাদের দৃষ্টি থেকে রক্ষা করো।"


তাবিজ ব্যবহার করা: ইসলামে বদ নজর থেকে বাঁচার জন্য তাবিজ ব্যবহার করা বৈধ। তবে তাতে অবশ্যই কুরআনের আয়াত বা হাদিসের সুরা লেখা থাকতে হবে।


ফুকাহাদের কাছে যাওয়া: যদি কেউ মনে করে যে তার উপর বদ নজর লেগেছে, তাহলে সে একজন ফকিহের কাছে যেতে পারে। ফকিহ তার উপর বদ নজর থেকে মুক্তির জন্য কিছু আমল বা চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারে।


বদ নজর থেকে মুক্তির জন্য কিছু নিয়ম


আল্লাহর ইবাদত করা: বদ নজর থেকে মুক্তির জন্য সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো আল্লাহর ইবাদত করা। আল্লাহ বলেন,

"যে ব্যক্তি আল্লাহর ইবাদত করে, আল্লাহ তাকে দুনিয়া ও আখিরাতে নিরাপত্তা দেবেন।"


(সূরা আন-নাহল, আয়াত: ৯৭)


সৎকাজ করা: সৎকাজ করলে আল্লাহর রহমত ও বরকত লাভ হয়। আর আল্লাহর রহমত ও বরকতের মাধ্যমে বদ নজর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।


ঈমানী শক্তি বৃদ্ধি করা: ঈমানী শক্তি বৃদ্ধি করলে বদ নজরের প্রভাব কমে যায়।


সৎ ও ভালো মানুষদের সাথে মেশা: সৎ ও ভালো মানুষদের সাথে মেশালে তাদের সৎ ও ভালো গুণাবলী থেকে লাভবান হওয়া যায়। আর সৎ ও ভালো গুণাবলী বদ নজর থেকে রক্ষা করে।


শেষ কথা, বদ নজর থেকে মুক্তির দোয়াবদনজর লাগলে করণীয় কি আশা করি উক্ত পোস্টটি পড়ার মাধ্যমে এই বিষয়ে পরিপূর্ণ ধারণা পেয়ে গিয়েছেন।বদবজর থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখতে ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের রক্ষা করতে মহান আল্লাহ তা'আলা ও মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নির্দেশ অনুযায়ী আমল করতে হবে। তাহলে মহান আল্লাহ তা'আলা আমাদেরকে কুদৃষ্টির প্রভাব থেকে রক্ষা করবে ও সুস্থতা দান করবে। 


tags:বদ নজর থেকে মুক্তির দোয়া,বদ নজর থেকে বাচার দোয়া,বদ নজর,বদ নজর থেকে বাচার উপায়,বদ নজর থেকে বাঁচার উপায়,বদ নজর থেকে মুক্তির উপায়,বদ নজর থেকে বাচার আমল,বদ নজর লাগলে করণীয়,বদ নজর থেকে বাঁচার দোয়া,বদ নজর দোয়া,বদ নজর থেকে মুক্তি,বদ নজরের দোয়া,বদনজর থেকে বাঁচার দোয়া,বাচ্চাদের বদ নজর থেকে বাচার দোয়া,বদনজর থেকে বাচার উপায়,বদনজর থেকে বাঁচার উপায়,বদ নজর থেকে বাচার দোয়া,বদ নজর থেকে বাঁচার দোয়া,শিশুদের বদ নজর,বদ নজর থেকে বাচার উপায়

সাম্প্রতিক পোস্ট সমূহ

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url